একাদশী হলো হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপবাস দিন, যা প্রতি মাসে দুইবার পালিত হয়। এটি ভগবান বিষ্ণুর প্রতি ভক্তি ও আধ্যাত্মিক শুদ্ধতার জন্য বিশেষভাবে পালন করা হয়।
একাদশী উপবাস আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে ভক্তরা উপবাস পালন করেন, প্রার্থনা করেন এবং ধর্মীয় কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখেন। একাদশী পালনের মাধ্যমে মানসিক শান্তি, শারীরিক সুস্থতা এবং আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করা যায়।
2025 সালের একাদশীর তালিকা
নিম্নলিখিত সারণীতে ২০২৫ সালের একাদশীর তারিখ, সময় এবং নাম দেওয়া হয়েছে:
| মাস | তারিখ ও সময় | একাদশীর নাম |
|---|---|---|
| জানুয়ারি | ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, দুপুর ১২:২২ – ১০ জানুয়ারি ২০২৫, সকাল ১০:১৯ | পৌষ পুত্রদা একাদশী |
| ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, সন্ধ্যা ৭:২৫ – ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, সন্ধ্যা ৮:৩১ | ষষ্ঠীলা একাদশী | |
| ফেব্রুয়ারি | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বিকাল ৯:২৬ – ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বিকাল ৮:১৫ | জয়া একাদশী |
| ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, দুপুর ১:৫৫ – ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, দুপুর ১:৪৪ | বিজয়া একাদশী | |
| মার্চ | ০৯ মার্চ ২০২৫, সকাল ৭:৪৫ – ১০ মার্চ ২০২৫, সকাল ৭:৪৪ | আমলকী একাদশী |
| ২৫ মার্চ ২০২৫, সকাল ৫:০৫ – ২৬ মার্চ ২০২৫, সকাল ৩:৪৫ | পাপমোচনী একাদশী, বৈষ্ণব পাপমোচনী একাদশী | |
| এপ্রিল | ০৭ এপ্রিল ২০২৫, সন্ধ্যা ৮:০০ – ০৮ এপ্রিল ২০২৫, রাত ৯:১২ | কামদা একাদশী |
| ২৩ এপ্রিল ২০২৫, বিকাল ৪:৪৩ – ২৪ এপ্রিল ২০২৫, দুপুর ২:৩২ | ভারুথিনী একাদশী | |
| মে | ০৭ মে ২০২৫, সকাল ১০:১৯ – ০৮ মে ২০২৫, দুপুর ১২:২৯ | মোহিনী একাদশী |
| ২৩ মে ২০২৫, সকাল ১:১২ – ২৩ মে ২০২৫, দুপুর ১০:২৯ | অপরা একাদশী | |
| জুন | ০৬ জুন ২০২৫, সকাল ২:১৫ – ০৭ জুন ২০২৫, সকাল ৪:৪৭ | নির্জলা একাদশী |
| ২১ জুন ২০২৫, সকাল ৭:১৮ – ২২ জুন ২০২৫, সকাল ৪:২৭ | যোগিনী একাদশী, বৈষ্ণব যোগিনী একাদশী | |
| জুলাই | ০৫ জুলাই ২০২৫, সন্ধ্যা ৬:৫৮ – ০৬ জুলাই ২০২৫, রাত ৯:১৪ | দেবশয়নী একাদশী |
| ২০ জুলাই ২০২৫, দুপুর ১২:১২ – ২১ জুলাই ২০২৫, সকাল ৯:৩৮ | কামিকা একাদশী | |
| আগস্ট | ০৪ আগস্ট ২০২৫, সকাল ১১:৪১ – ০৫ আগস্ট ২০২৫, দুপুর ১:১২ | শ্রাবণ পুত্রদা একাদশী |
| ১৮ আগস্ট ২০২৫, বিকাল ৫:২২ – ১৯ আগস্ট ২০২৫, বিকাল ৩:৩২ | আজা একাদশী | |
| সেপ্টেম্বর | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সকাল ৩:৫৩ – ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সকাল ৪:২১ | পার্শ্ব একাদশী |
| ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সকাল ১২:২১ – ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ১১:৩৯ | ইন্দিরা একাদশী | |
| অক্টোবর | ০২ অক্টোবর ২০২৫, সন্ধ্যা ৭:১০ – ০৩ অক্টোবর ২০২৫, সন্ধ্যা ৬:৩২ | পাপনকুশা একাদশী |
| ১৬ অক্টোবর ২০২৫, সকাল ১০:৩৫ – ১৭ অক্টোবর ২০২৫, সকাল ১১:১২ | রমা একাদশী | |
| নভেম্বর | ০১ নভেম্বর ২০২৫, সকাল ৯:১১ – ০২ নভেম্বর ২০২৫, সকাল ৭:৩১ | দেবুথানী একাদশী |
| ১৫ নভেম্বর ২০২৫, সকাল ১২:৪৯ – ১৬ নভেম্বর ২০২৫, সকাল ২:৩৭ | উত্তাপনা একাদশী | |
| ডিসেম্বর | ৩০ নভেম্বর ২০২৫, রাত ৯:২৯ – ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, সন্ধ্যা ৭:০১ | মোক্ষদা একাদশী, গুরুবায়ুর একাদশী |
| ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, সন্ধ্যা ৬:৪৯ – ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, রাত ৯:১৯ | সাফলা একাদশী | |
| ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, সকাল ৭:৫০ – ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, সকাল ৫:০০ | পৌষ পুত্রদা একাদশী |
একাদশী পালনের নিয়ম
একাদশী উপবাসের সময় কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। এই দিনে ভক্তরা সাধারণত শস্যজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলেন। ফল, দুধ, এবং হালকা খাবার গ্রহণ করা যায়। নির্জলা একাদশীর মতো কিছু একাদশীতে পানি গ্রহণও বন্ধ থাকে। ভক্তরা এই দিনে প্রার্থনা, ভগবান বিষ্ণুর পূজা এবং ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠে সময় দেন।
২০২৫ সালের একাদশী তালিকা আপনার ধর্মীয় পরিকল্পনায় সহায়ক হবে। প্রতিটি একাদশীর নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে, যেমন মোক্ষদা একাদশী মোক্ষ লাভের জন্য বিশেষ। এই তালিকা ব্যবহার করে আপনি আগাম পরিকল্পনা করতে পারেন। একাদশী পালনের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক শান্তি ও জীবনের শুদ্ধতা অর্জন করুন।
একাদশী ব্রত হিন্দু ধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক অনুশীলন, যা ভক্তরা ভগবান বিষ্ণুর প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রকাশের জন্য পালন করেন। এই ব্রত পালনের মাধ্যমে মানুষ তাদের অতীতের পাপ থেকে মুক্তি পেতে পারেন এবং মোক্ষের পথে এগিয়ে যেতে পারেন। এই লেখায় আমরা একাদশী ব্রতের গুরুত্ব, উদ্দেশ্য, নিয়ম, এবং বিভিন্ন একাদশীর বিশেষত্ব নিয়ে আলোচনা করব।
একাদশী ব্রত কী
হিন্দু চান্দ্র ক্যালেন্ডার অনুসারে, প্রতি চান্দ্র মাসে দুটি একাদশী দিন থাকে—একটি শুক্লপক্ষে (পূর্ণিমার দিকে) এবং অপরটি কৃষ্ণপক্ষে (অমাবস্যার দিকে)। এই দিনটি একাদশ তিথি হিসেবে পরিচিত। ভগবদ্গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে একাদশী ব্রতের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন। এই দিনে উপবাস করা শরীর ও মনের শুদ্ধি এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য অত্যন্ত ফলদায়ক বলে মনে করা হয়।
একাদশী ব্রতের প্রধান লক্ষ্য হল আত্মার শুদ্ধি এবং মোক্ষ লাভের জন্য প্রস্তুতি। এই দিনে উপবাস ও মন্ত্র জপ, যেমন “ওম নমো ভগবতে বাসুদেবায়” বা “ওম নমো নারায়ণায়”, ভক্তদের ভগবান বিষ্ণুর কাছাকাছি নিয়ে যায়। এই ব্রত পালনের মাধ্যমে মানুষ প্রতিকূল গ্রহের প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে পারেন এবং মানসিক শান্তি ও সুখ লাভ করতে পারেন।
একাদশী দিনটি শরীরের ১১টি ইন্দ্রিয়ের প্রতিনিধিত্ব করে, যার মধ্যে পাঁচটি কর্মেন্দ্রিয়, পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয় এবং মন রয়েছে। উপবাসের মাধ্যমে এই ইন্দ্রিয়গুলো নিয়ন্ত্রিত হয়, যা শরীর ও মনকে সুস্থ রাখে।
একাদশী ব্রতের নিয়ম
একাদশী ব্রত পালনের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মানতে হয়:
- উপবাস: এই দিনে সম্পূর্ণ উপবাস করা উচিত। কিছু ব্রতের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র জল গ্রহণ করা যায়, যেমন নির্জলা একাদশী। যারা সম্পূর্ণ উপবাস করতে পারেন না, তারা একবেলা ফল বা হালকা খাবার খেতে পারেন।
- মন্ত্র জপ: ভগবান বিষ্ণুর মন্ত্র, যেমন “ওম নমো নারায়ণায়”, জপ করা শুভ।
- দান-ধ্যান: দান করা, বিশেষ করে খাদ্য, তিল, ফল ইত্যাদি।
একাদশী ব্রত হিন্দু ধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক অনুশীলন, যা ভক্তরা ভগবান বিষ্ণুর প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রকাশের জন্য পালন করেন। এই ব্রত পালনের মাধ্যমে মানুষ তাদের অতীতের পাপ থেকে মুক্তি পেতে পারেন এবং মোক্ষের পথে এগিয়ে যেতে পারেন। এই লেখায় আমরা একাদশী ব্রতের গুরুত্ব, উদ্দেশ্য, নিয়ম, এবং বিভিন্ন একাদশীর বিশেষত্ব নিয়ে আলোচনা করব।
হিন্দু চান্দ্র ক্যালেন্ডার অনুসারে, প্রতি চান্দ্র মাসে দুটি একাদশী দিন থাকে—একটি শুক্লপক্ষে (পূর্ণিমার দিকে) এবং অপরটি কৃষ্ণপক্ষে (অমাবস্যার দিকে)। এই দিনটি একাদশ তিথি হিসেবে পরিচিত। ভগবদ্গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে একাদশী ব্রতের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন। এই দিনে উপবাস করা শরীর ও মনের শুদ্ধি এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য অত্যন্ত ফলদায়ক বলে মনে করা হয়।
একাদশী ব্রতের প্রধান লক্ষ্য হল আত্মার শুদ্ধি এবং মোক্ষ লাভের জন্য প্রস্তুতি। এই দিনে উপবাস ও মন্ত্র জপ, যেমন “ওম নমো ভগবতে বাসুদেবায়” বা “ওম নমো নারায়ণায়”, ভক্তদের ভগবান বিষ্ণুর কাছাকাছি নিয়ে যায়। এই ব্রত পালনের মাধ্যমে মানুষ প্রতিকূল গ্রহের প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে পারেন এবং মানসিক শান্তি ও সুখ লাভ করতে পারেন।
একাদশী দিনটি শরীরের ১১টি ইন্দ্রিয়ের প্রতিনিধিত্ব করে, যার মধ্যে পাঁচটি কর্মেন্দ্রিয়, পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয় এবং মন রয়েছে। উপবাসের মাধ্যমে এই ইন্দ্রিয়গুলো নিয়ন্ত্রিত হয়, যা শরীর ও মনকে সুস্থ রাখে।
হিন্দু চান্দ্র ক্যালেন্ডার অনুসারে, প্রতি চান্দ্র মাসে দুটি একাদশী দিন থাকে—একটি শুক্লপক্ষে (পূর্ণিমার দিকে) এবং অপরটি কৃষ্ণপক্ষে (অমাবস্যার দিকে)। এই দিনটি একাদশ তিথি হিসেবে পরিচিত। ভগবদ্গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে একাদশী ব্রতের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন। এই দিনে উপবাস করা শরীর ও মনের শুদ্ধি এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য অত্যন্ত ফলদায়ক বলে মনে করা হয়।
বিভিন্ন একাদশী ও তাৎপর্য
বছরে মোট ২৪টি একাদশী পালিত হয়, এবং প্রতিটির নিজস্ব তাৎপর্য ও নিয়ম রয়েছে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ একাদশী হল:
- পুত্রদা একাদশী: জানুয়ারিতে পালিত এই একাদশী সন্তান লাভের জন্য শুভ। ভক্তরা এই দিনে উপবাস করে ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।
- সতীলা একাদশী: এই দিনে তিল দান করা বিশেষ শুভ। পেয়ারা, কুমড়া, এবং নারকেল উৎসর্গ করা হয়।
- আমলকী একাদশী: ভগবান বিষ্ণুর প্রিয় ফল আমলার পূজা এই দিনে গুরুত্বপূর্ণ। আমলা সেবন ও দান করা শুভ।
- পাপমোচিনী একাদশী: চৈত্র মাসে পালিত এই একাদশী পাপ থেকে মুক্তির জন্য উপবাস করা হয়।
- ভারুথিনী একাদশী: এই দিনের উপবাস দশ হাজার বছরের তপস্যার সমান বলে মনে করা হয়। ব্রাহ্মণদের খাদ্য দান করা শুভ।
- নির্জলা একাদশী: সবচেয়ে কঠিন ব্রত, যেখানে শুধুমাত্র এক ফোঁটা জল গ্রহণ করা যায়। এটি সবচেয়ে পুণ্যময় একাদশী।
বৈদিক গবেষণা অনুসারে, একাদশী উপবাস শরীর ও মনের শুদ্ধি ঘটায়। এটি শরীরকে ডিটক্স করে এবং হজমশক্তি ও বিপাক ক্রিয়াকে উন্নত করে। প্রতি ৪৮ দিনে শরীরের কোষগুলো নবীকরণ হয়, এবং একাদশী উপবাস এই প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। ঋষিরা তিন দিনের উপবাসের মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ রাখতেন, এবং একাদশী এই নিয়মের একটি অংশ।
একাদশী ব্রত শুধু আধ্যাত্মিক নয়, শারীরিক সুস্থতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এটি মানসিক শান্তি, শারীরিক সুস্থতা, এবং আত্মার শুদ্ধি নিয়ে আসে। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, উপবাস মনকে ঈশ্বরের প্রতি কেন্দ্রীভূত করে এবং শরীরকে শুদ্ধ করে। এই ব্রত পালনের মাধ্যমে ভক্তরা ভগবান বিষ্ণুর কৃপা লাভ করেন এবং জীবনের সুখ ও সমৃদ্ধি অর্জন করেন।
একাদশী ব্রত একটি পবিত্র ও শক্তিশালী আধ্যাত্মিক অনুশীলন, যা শরীর, মন, এবং আত্মার শুদ্ধি ঘটায়। এই দিনে উপবাস, মন্ত্র জপ, এবং দান-ধ্যানের মাধ্যমে ভক্তরা ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদ লাভ করেন। আপনি যদি আধ্যাত্মিক ও শারীরিক উন্নতি চান, তবে একাদশী ব্রত পালন করা একটি আদর্শ পথ।










